উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭/০৯/২০২২ ৯:০৮ এএম
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ / ছবি : ওবাইদুল হক চৌধুরী

চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এরমধ্যেই শেষ হয়েছে প্রকল্পের ৭২ শতাংশ কাজ। বাকি ২৮ শতাংশ কাজ শেষ হলেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ট্রেনে কক্সবাজারে যাওয়ার স্বপ্নপূরণ হবে। এই রেলপথ পর্যটন খাত ছাড়াও কক্সবাজারের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে এই অঞ্চলের মৎস্য সম্পদ, লবণ, রবারের কাঁচামাল এবং বনজ ও কৃষিজ পণ্য পরিবহনব্যবস্থা আগের চেয়ে অনেক সহজ হবে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি বিনোয়োগ বৃদ্ধি পাবে।
গত ২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশনের নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে এসে সরকারের বাস্তবায়ন পরিবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, ২০২৪ সালে প্রকল্পের মেয়াদের সময়সীমা হলে-ও ২০২৩ সালের শেষের দিকে সম্পূর্ণ হবে। তিনি এটি রেলযোগাযোগ কেবল পর্যটন নয়, আন্ঞ্চলিক যোগাযোগ ও অর্থনৈতিকেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে এই রেললাইন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ রেললাইন প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে প্রায় ৭২ শতাংশ শেষ হয়েছে। পাশাপাশি চলছে কক্সবাজারে আইকনিক স্টেশনসহ ৯টি স্টেশনের নির্মাণ কাজ।
রেলের প্রকৌশলীরা জানান, প্রকল্পের আওতাধীন চারটি বড় সেতুসহ ২৫টি সেতুর নির্মাণকাজও শেষের দিকে। বড় সেতুগুলো নির্মিত হচ্ছে মাতামুহুরী নদী, মাতামুহুরী শাখানদী, খরস্রোতা শঙ্খ এবং বাঁকখালী নদীর ওপর।
সহকারী প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবুল কালাম জানান, কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পে ৯টি স্টেশন বিল্ডিংয়ের মধ্যে লোহাগাড়া ছাড়া অন্য ৮টি স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে। এরমধ্যে দোহাজারী স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। দোহাজারী এবং চকরিয়ায় সিনিয়র উপ সহকারী ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি থাকবে। প্রতিটি স্টেশনে তিনজন স্টেশন মাস্টারের বাড়ি থাকবে। চকরিয়া-হারবাং স্টেশনের ছাদও হয়ে গেছে। কক্সবাজার স্টেশনের কাজ চলছে পুরোদমে। দৃষ্টিনন্দন এই স্টেশনের অধিকাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কক্সবাজার স্টেশনে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ১৭টি বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে। সবগুলো স্টেশনের কাজ হয়েছে। এখন মূল প্রকল্পের ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
দোহাজারি- কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান জানান, চকোরিয়া থেকে মালবাহী ট্রেন যাবে মাতারবাড়ী। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত হলেও ২০২৩ সালে শেষ হবে দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের কাজ।
জানা যায়, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে (১শ’ কিলোমিটারের মধ্যে) মোট ৯টি স্টেশন বিল্ডিং থাকছে। স্টেশন বিল্ডিংগুলো হলো- দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ (ঈদগাঁও), রামু ও কক্সবাজার।
প্রকল্প ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ স্থাপন করতে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ বাস্তবায়নের জন্য সরকার উদ্যোগ নেয়। ২০১৭ সালে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৩৯টি সেতুসহ রেলপথ নির্মাণের চুক্তি হয়। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (সিসিইসিসি) ও দেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই লটের কার্যাদেশ পায়। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের ঝিলংজা চৌধুরীপাড়ায় দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার এবং রামু-ঘুমঘুম সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রকল্পের প্রকৌশলিরা জানান, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইনে ৩৯টি বড় ব্রীজ, ১৪৫ টি কালভার্ট, বিভিন্ন শ্রেণীর ৯৬ টি লেভেল ক্রসিং ছাড়াও হাতি চলাচলের জন্য আন্ডারপাস ও ওভারপাস নির্মাণ করা হবে। প্রতিঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার গতির ট্রেন চলবে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনাঞ্চলের ভেতরে হাতি চলাচলের জন্য দুটি আন্ডারপাসের কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের সবগুলোর সেতুর স্প্যান ও পিলারের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। কক্সবাজার অংশের ২০টি সেতুতে গার্ডার বসানো প্রায় শেষের পথে। দোহাজারী অংশের ১৮টি সেতুর স্প্যান ও পিলার নির্মাণ শেষে ১২ এপ্রিল থেকে গার্ডার বসানো শুরু হয়েছে। এদিকে ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারে ঝিনুকের আদলে একটি আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন ভবন নির্মিত হচ্ছে। এর কাজও শেষ হয়েছে ৬৫ টি শতাংশ। ৬তলা এ ভবনে সব ধরনের সুবিধা রাখা হবে। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত

মনোনয়নপত্র বিতরণ কাল; উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের নির্বাচন ৮ নভেম্বর

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ২০২৫-এর তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার (১ ...

উন্মুক্ত হলেও সেন্টমার্টিনে যাচ্ছে না জাহাজ : পর্যটকহীনতা ও শর্তই মূল বাধা

সরকারি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পরও নভেম্বর মাসে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ ...

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মা’ই’ন বিস্ফোরণে আহত বিজিবির নায়েক আক্তার হোসেনের মৃত্যু

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের বাইশফাঁড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হওয়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ...

উখিয়া হাসপাতাল ১০০ শয্যায় উন্নীত না হলে চিকিৎসা সংকট বাড়বে!

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার একমাত্র সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আধুনিকায়ন ও ৫০ শয্যা থেকে ...